মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০১১

আমার ডিপার্টমেন্টাল-ননডিপার্টমেন্টাল রিলেশনগুলি

জানা কথা ভাই, আপনি লেখাটা পড়ার আগেই চমকে গেছেন। মনে মনে ভাবছেন, অনেক রিলেশনের কথাই তো শুনছি মাগার এইরকম "ডিপার্টমেন্টাল-ননডিপার্টমেন্টাল" নামক উদ্ভট কিছু তো আগে শুনি নাই। তো আপনাকেই বলছি স্যার, লেখাটা মনো+ আই মিন মনযোগ দিয়ে পড়েন। তাহলে দেখবেন কতগুলো বানানো সহজ এমন রিলেশন আপনি মিস করছেন। তার আগে বলি, আমার সাপেক্ষে যারা ননডিপার্টমেন্টাল আই মিন যারা সি.এস.ই ডি.ইউ তে পড়েন না তাদের সব রিলেশন বুঝতে হয়ত একটু কষ্ট হবে। কিন্তু কষ্ট হইলেও পড়েন, আশা করছি মজা পাবেন।

প্রথমে সহজ সাভাবিক কিছু রিলেশন দিয়ে যে শুরু করব তার কোন উপায় নাই ভাই। উদাহরন দেখবেন ? ওকে শুরু করি, খালা আমাদের সবার খালা হয় শুধু একজন বাদে। কি চমকে গেলেন না ? হা হা হা ... জানা কথা। আচ্ছা খুলেই বলি তাহলে ব্যাপারটা, আমাদের তখন মাত্র ক্লাশ শুরু হইছে ডিপার্টমেন্টে আই মিন আমাদের ফার্স্ট ইয়ারের কথা আরকি। হুমায়ারা তাসনিম প্রিয়াঙ্কা কে ধরে মেয়ে CR(ছি আর - Class Representative) বানায়ে দেওয়া হইছে। আর সাদ তো ছেলেদের CR আগে থেকেই। তো সাদই মনে হয় প্রিয়াঙ্কাকে প্রথম খালা খালা বলা শুরু করছিল। সেই থেকে শুরু। উঠতে বসতে খালা খালা করতে আমাদের এই ভাল মেয়ে প্রিয়াঙ্কার সুন্দর নামটি আজকে বিলীনের পথে। তার থেকেও প্রকট সমস্যা হয় আসলে আমাদের। ধরেন কেউ একজন তার নিজের খালার কোন কথা আমাদের সামনে বলছে। আমরা একটু পরে বুঝি যে এই খালা আমাদের খালা নয়। যাই হোক, খালাকে নিয়ে প্যাঁচাল শেষ করার আগে উপরের একটা কথা এক্সপ্লেইন করি। খালা আমাদের সবার খালা একজন বাদে ... কথা ঠিকই তো আছে, খালা তো খালুর খালা হয় না তাই না ? খালুর হয় "এই"। :P

খালার পরেই যে রিলেশনে নিজেকে জড়িয়েছিলাম সেটা হল "জানু"/"ডিপার্টমেন্টাল জানু", আর পিঙ্কি হল সেই ভাগ্যবতী মেয়ে(!!!)। পিঙ্কিকে কেন এই "জানু" "জানু" করতাম ঠিক মনে নেই। কিন্তু এই ব্যাপারে একটা স্মৃতি মনে আছে। একদিন ক্লাশে আমি শুভর সামনে পিঙ্কিকে জানু জানু বলে খেপানোর ট্রাই করছি। আর পিঙ্কিও জানু জানু বলে আমার দেয়া "সিগনাল গুলো" ব্যাক করছিল। তো তখন আবির ছিল আমাদের সাথে(যা ভাবছেন তাই ... এই আবির সেই তুখড় মেধাবী ছেলে আবির)। আবিরের ক্লাশে প্রধান কাজ ছিল চোখ বন্ধ করে থাকা। ঘুমোত না ... জাষ্ট চোখ বন্ধ করে থাকত। তো ওই দিনও সে ওইরকম অবস্থায় আছে, চোখ বন্ধ। আর ওই দিকে আমি জানু জানু বলে পিঙ্কির সাথে ফাজলামী করছি। আবির চোখটা খুলে বলল, বাহ একজন জানু জানু করছে আর আরেকজন সেটার রিপলাই করছে। কি অদ্ভুত!! সাম্প্রতিক তথ্য, আমি পিঙ্কিকে জানু বলা ছেড়ে দিয়েছি। কেন জানি এখন আর বলা হয় না ... আর ও নিজেও বলে না। তবে যাই হোক, পিঙ্কি জেনে রাখিস যে জানুর আসনে তোকে বসিয়েছিলাম, সেখানে তুই সব সময় থাকবি( =)) =)) =)) )।

তৃষাকে ডাকি "শ্যালিকা"। এই শ্যালিকা ডাকার কারনটা অনেকেই জানে না আমাদের ক্লাশের। আসল ঘটনাটার শুরু হয়েছিল ফার্ষ্ট ইয়ারের হার্ডওয়ার ল্যাবে। একদিন ল্যাবে আমি আর শুভ বসে আছি। সাথে খালা, ম্যাড, মামনি, পিঙ্কি এরা(ম্যাড, মামনি আসলে ওদের নাম না ... কিন্তু এইগুলি ডাকতে ডাকতে অভ্যাস হয়ে গেছে)। তো শুভ পিঙ্কির কাছে পানি চাইল, কিন্তু পিঙ্কির ব্যাগে পানি ছিল না। ছিল তৃষার কাছে। আমিও একই সময় পানি চাইলাম। কিন্তু তৃষা পানি দিল শুভকে। তখনি প্রথম বলছিলাম, হু বুঝছিতো ... দুলাভাই(শুভ)রেই তো দিবা। এখানে এইটা বলার কারন, তৃষা আর পিঙ্কি একি কলেজ় থেকে আসছিল। সেই থেকে শুরু। তৃষা হয়ে গেল আমার "ডিপার্টমেন্টাল শ্যালিকা" !!

ডিপার্টমেন্টে আমার একটা মামাও আছে। সাদ হল সেই মামা। সাদই আমাদেরকে ক্লাশে একজন খালা দিয়েছিল। অনেকটা সেই কারনেই তাকে মামা বানায়ে খালা-মামা কোঠা পুরন করলাম।

এর পরেই আসে, "ডিপার্টমেন্টাল প্রেমিকা"। এতক্ষন পড়ে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন আমার জন্য রিলেশন ক্রিয়েট করাটা কতটা ডাল-ভাতের মত ব্যাপার। আসলে ডাল-ভাত হলেও আমি এই রিলেশনে বেশ সিরিয়াস ছিলাম (=)) =)) =)) )। কি রকম জানেন ? আমি ডিপার্টমেন্টের সবাইকে বলে বেড়াতাম এই হচ্ছে আমার "ডিপার্টমেন্টাল জিএফ"। ছোট বড় সবাই জানত ব্যাপারটা(=)) =)) =)) )। ওহহ, আসলে বলাই তো হয় নাই যে কোন ভাগ্যবতী নারী ছিল আমার এই জিএফ। মাদিহা তাবাসসুম ওরফে ম্যাড ছিলেন সেই বিখ্যাত নারী। এখানে একটা ব্যাপার, আমি "ছিল" কথাটা বলছি এই কারনে যে ... সম্প্রতি এক বৃষ্টি ভেজা দুপুরে সে অন্যের হয়ে গেছে[ :( :( :( ]। মনে আছে, একদিন ম্যাড আমাকে জিজ্ঞাস করছে - "আচ্ছা তুই কি থার্টিনের সবাইকে বলে বেড়াচ্ছিস যে আমি তোর জিএফ ?" আমার উত্তর, "অবশ্যই ... কেন নয় ? আমি তোকে পাব না, অন্য কাউকেও তোকে পেতে দিব না !!" সর্বশেষ ব্যাপার, যেহেতু আমার "ডিপার্টমেন্টাল প্রেমিকা" অপশনটি খালি ... আগ্রহী কেউ থাকলে যোগাযোগ করতে পারেন।

আপনারা বলতে পারেন খালা আছে ... খালু নাই ? জী জী খালুও আছেন। আশরাফ হচ্ছেন আমাদের সেই খালু। আমার মনে হয় এই রিলেশনের ইতিহাস আপনাদের কে বুঝিয়ে বলতে হবে না। আসলে ইনার খালু হওয়ার ইতিহাস যদি বলতেই হয়, তাহলে অন্য পোষ্টে বলতে হবে। অনেক বিরাট ইতিহাস এটি। সর্বশেষ তথ্য, খালুকে সব জায়গায় এখন আর খালু বলা যাচ্ছে না। কিছু সমস্যা হচ্ছে। ফলাফল সরূপ সে কাল সাদের বাসায় বসে অন্য একটি খেতাব পেয়েছেন। "আঙ্কেল অ্যাশ" ... আশা করি খালুকে মাঝে মাঝে এই নামেও ডাকা হবে এখন থেকে।

ডিপার্টমেন্টে আমার একটি মেয়েও আছে !! মা ছাড়া মেয়ে আমার। নাজিয়া আলম নায়লা(ওরফে মুড়ির ঠোঙ্গা) হল সে। এই মেয়ে সব কিছু কম কম বুঝে। ধরেন আপনি একটা মজার কথা বললেন, সবাই হেসে গড়াগড়ি খেয়ে মাত্র উঠল। এরপর নায়লা জিজ্ঞেস করবে, এই তোরা হাসতেছিস কেন ? আরো ব্যাপার আছে। ধরেন সবাই মিলে গেলেন "শর্মা হাউজে" খেতে। নায়লাও গেল সবার সাথে। সে ওখানের কিছু খাবেন না! সে যাবে "হট কেক"এ। ওখান থেকে একখানা চকলেট কেন এনে সবাইকে দেখিয়ে দেখিয়ে খাবেন। চকলেটও পছন্দ করে বাচ্চদের মত এই ময়েটি। সব মিলিয়ে সে হয়ে গেল সবার আদরের "মামনি"!! সাম্প্রতিক তথ্য, আমি আমার মেয়ের জন্য একখানা জামাই খুজঁছি। আর কি কিছু বলা লাগবে ? সেরকম কারো সন্ধান থাকলে জানাবেন !!

অনেক রিলেশন বললাম। এতক্ষনে বিরক্ত না হলেও এখন আরো বলতে গেলে নিশ্চিত ভাবে বিরক্ত হবেন। তাই ওই দিকে আর না আগাই। তারপরও কিছু ছোট ছোট রিলেশন(দূর্বল রিলেশন) আছে। যেমন রবিউল হল "কাকা", মেরী "বড় বউ", দিবা "ছোট বউ", সাদিয়া জানি কি হয়(কিছু একটা হয় আরকি), "পিক সামওয়ান অফ ইওর ওউন সাইজ" টাইপের জানি কে একজন আছে(!!) ... এই ধরনের আরো কিছু ছোট ছোট রিলেশন নিয়েই আমার ডিপার্টমেন্টাল জীবন।

একেবারে শেষে বলতে চাই, উপরের সবাইকে হয়ত মজা করে অনেক কিছু ডাকি। কিন্তু আমরা সবাই খুব ভাল বন্ধু। আই লাভ ইউ আলল ...

ভাল থাকবেন।

রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০১১

আমার কন্টেষ্টময় জীবনের শুরুর কথা ...

ভাবছিলাম আতলামী করব না। এই ব্লগে প্রোগ্রামিং কন্টেষ্ট নিয়ে কিছু লিখব না। কিন্তু সেটা কোই আর পারলাম ? =))

আমি একটা কথা আগে বলে নেই, অনেকে অনেক কিছু হইতে চায় জীবনে। আমিও চাইছি। কিন্তু আর যাই চাইনা কেন ... আমি কখনো কম্পিউটার সায়েন্সে পড়তে চাইছি, এইটা কেউ বলতে পারবে না কখনোই। আমি খালি চাইছি ইঞ্জিনিয়ার হব। কিসের ইঞ্জিনিয়ার হব, অতকিছু চিন্তা করে রাখি নাই। উমমম ... দেশের সাধারন পাবলিকের সাথে এক মত প্রকাশ সরূপ এক কালে ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চাইছিলাম। কিন্তু চাইলেই কি হইব নাকি ? কপালে ছিল সি এস ই ... কি আর করা ?

তো এই পোষ্ট আমার "কি হতে চেয়েছিলাম ছোটবেলায় ?" টাইপের কোন পোষ্ট না। সো, ওই ব্যাপারে প্যাচাল বন্ধ করি। আসল ব্যাপারে আসি। সি এস ই তে ভর্তি হয়ে দেখি একটা বড় ভ্যাজালের পরলাম। সাবাই খালি দুইটা জিনিশ নিয়া কথা কয় খালি। একটা হল C( প্রগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ছি :P) আরেকটা হল প্রগ্রামিং কন্টেষ্ট। আমার অবস্থা হল, যেহেতু কোন ব্যাপারে কোন নলেজ নাই ... তো ট্রাই টু সাক(চেখে দেখা আরকি) এভরিথিং। প্রথম প্রথম আমি অবশ্য খালি পড়তাম !!! কেন পড়তাম সেটা পরে বলতেছি। আমাদের জুন মাসে ইউনিভার্সিটি পুরা একমাস বন্ধ থাকে। তো ওই জুনের আগে আমাদের ফার্স্ট ইয়ারের "প্রগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ইন C" কোর্সের একটা ইনকোর্স পরীক্ষা হয়। তো অই পরীক্ষায় খাইলাম লাড্ডু। কারন আমি একেবারে শুরুতে প্রগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজকে একটা ফানি ব্যাপার ধরে ফালায়ে দিছিলাম। ভাবছিলাম, যাহ ... এইটা কুনো সাবজেক্ট হইলো ? আইবো আর ফু মাইরা জাষ্ট উড়ায়ে দিব। তো এই পরীক্ষায় সব কিছু উড়ায়ে দিতে গিয়া দেখি ... বাকি সব কিছু ঠিক মতই আছে, খালি আমি নিজে এত বড় একটা শরীর নিয়া উড়ে গেছি। কি আজব ব্যাপার। পরে নিজের বোধোদয় হল, নাহ এভাবে উড়ানো যাবে না। তো কি করা যায় ? পায়েল পোলাটা প্রগ্রানিংএ ভাল। ওকে আগেই মাঝে সাজে ধরতাম, কি করা যায় এই ব্যাপারে বুদ্ধি সুদ্ধি নেওয়ার জন্য। তো, ও অনেক আগে আমাকে দিয়া ইউভা নামের একটা সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলে দিছিল। তো এইবার যখন ওকে ধরলাম জুনের আগে ... ও বলল, সামনে যেহেতু অনেক বড় বন্ধ। কন্টেষ্ট করে দেখতে পারিস। তো আমি একবার ভাবি শালা নিজে ওইডি করে ... এহন আমারেও ঢুকাতে চায়। তো আমি এখানে এক গভীর ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেলাম এখানে। নিজে অনেক ভেবেটেবে ডিসাইড করলাম ... না হয় দেখি গিয়ে কি আছে এতে ... ভাল না লাগলে না করলাম। তো ওই ভাবাই ছিল আমার জীবনের খুব সম্ভবত একি সাথে খুব ভাল এবং খুব খারাপ ডিসিশান। কারন, আমি একদিকে যেমন মজার চ্যালেঞ্জিং একটা জিনিস পাইলাম অপরদিকে নিজেকে একটা খুব কড়া একটা নেশার ফাঁদে ফেললাম। যেই ফাঁদ থেকে এখনো বের হতে পারি নাই। তাই পায়েলকে একি সাথে ধন্যবাদ/বকাঝকা দিলাম।

তো জুন মাসে আমার মনে আছে আমি ওই ইউভা সাইটে প্রায় ৮০টার মত প্রব্লেম সলভ করছিলাম। কন্টেষ্টে খুব ভাল একটা কিছু হইতাম না কখনোই। কিন্তু মনোয়ার স্যার(এই ব্যাক্তি হলেন আমার খুব খুব খুব ইনফিনিট সংখ্যক খুব পছন্দের মানুষ ... আশা করা যায়, উনাকে নিয়ে একটা পোষ্ট দিব পরে, তাই এখানে কিছু না বলি) যোবায়ের(পায়েল), সামাউন(যাকে অনেক আগেই আমি আমার পছন্দের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিছি ... জাষ্ট তখনকার কথা ভেবে লিখলাম), আশরাফ(পরে আমার টিমমেট) ... এদের উৎসাহে কন্টেষ্ট চালায়ে গেলাম। তখনকার মত কন্টেষ্ট করতাম ইন্ডিভিজুয়াল। মানে একা একা। আমার মনে আছে, ফার্ষ্ট কন্টেষ্টে আমি ৬টা প্রোব্লেমের মধ্যে মাত্র একটা অ্যাকসেপ্ট পাইছিলাম। কিন্তু আমি আর ৩টার সলুশানের খুব কাছে ছিলাম। আরো মনে আছে, ওইদিন সন্ধ্যায় পায়লের সাথে দেখা করতে ওর বাসায় গেছিলাম। তখন ও আমাকে দেখা মাত্র বলছিল, আরে তুই তো আজকে ফাটায়ে দিলি(!!!) ... আমি তো গেলাম ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে। মনে মনে অনেক হিসাব কষছি এই ভেবে যে, তবে কি কন্টেষ্টের পরে আমার আর ২/১টা অ্যাকসেপ্ট পেলো ?( =)) =)) =)) ব্যাপার হল আমি তখনো তেমন কিছু বুঝতাম না এই ব্যাপারে ...)। তো পরে ও বলল, আরে প্রথম কন্টেষ্ট হিসেবে তো তুই ব্যাপক করছিস(পুরাই চাপা, এই ছেলেটা এইরকম অসংখ্য চাপা মেরে তখন আমার উৎসাহে জোয়ার দিত)।তো আমিও মদনের মত ভাবলাম, আসলেই মনে হয় এইটা কুপানো পার্ফরমেন্স। তো যেহেতু একবার কুপায়ে দিছিই ... সামনে না জানি আর কত কুপানি বাকি আছে রে ... !!! এখন বুঝতে পারছেন আমি কতটা না বুঝে অন্ধের মত কন্টেষ্টে ঝাপ দিছিলাম !!!

আরেকটা ব্যাপার ছিল তখন, যেটা আমাকে কন্টেষ্টে উৎসাহ দিত। যারা কন্টেষ্ট করত, তারাই গলা উচায়ে ডিপার্টমেন্টে হাঁটত। অন্যরা এভাবে গলা উচায়ে হাটত না। তো আমারও গলা উচাইতে ইচ্ছা হইল। সো, ফলাফল সরূপ আমি হয়ে গেলাম কন্টেষ্টাইন।

এ তো গেল একদম শুরুর কথা। কিছু দিন পর মানে যখন আই.ছি.পি.ছি.(icpc) র জন্য সবাই প্রিপারেশান নিচ্ছিল। তখন দেখলাম কন্টেষ্টের আরেক রূপ। যেটাকে আবার সবাই কিনা বলে "টিম কন্টেষ্ট"। এখন পরলাম মহা মুছিবতে। কার সাথে টিম করবো ? কি ভাবে করবো ? আমি তখন নিজেই তেমন কিছু(বলা ভাল মোটেই কিছু) পারি না। আমাকে দলে নিবে কে ? উপরে একটু ভুল বললাম। ওইটা তখন icpc ছিল না। ছিল এমনি কোথায় জানি ... আচ্ছা মনে পরছে, ওইটা ছিল AUST-NCPC কন্টেষ্টের সময়কার ঘটনা। তো যেহেতু আমাকে নেওয়ার মত কেউ ছিল না(অনেকেই তখন সমানে ভাব নিছে ... পরে মনে রাখি নাই। মনে রাখলে জবাব দেওয়ার মত পজিশান আমিও এক সময় পাইছিলাম) আমি অনেকটা নিজেই একটা দল করলাম। এখানে একটা ব্যাপার, যেটা আমি এই পরিস্থিতি তে শিখছি ... নিজে ভাল হলে, আপনাই সবাই তাকে দলে নিবে। কিন্তু ভাল দল পেতে হলে, নিজেকে শুধু ভাল হলেই চলবে না ... নিজের স্বভাব ভাল করতে হবে। ( =)) =)) =)) অনেক গম্ভীর কথা কয়ে ফেললাম :P)। তো তখনকার মত একটা সমাধান পেলাম, শুভ। শুভর পরিচয় আমি এভাবে দিতে পছন্দ করি "আমার বন্ধু শুভ"। আসলেই তাই। আমার যে খুব কম কিছু ট্রু ফ্রেইন্ড আছে - শুভ তাদের একজন। ওকে নিয়ে পরে লিখব। তো যেটা হল, আমাদের ক্লাশের থেকে কয়েকটা টিম আসল। রিদোয়ান-সাকিন-যোবায়ের মিলে একটা টিম। সামাউন জানি কাকে নিয়ে একটা টিম করছিল(এই ছেলে এত বেশী টিমের মেম্বার ছিল যে কখন কোনে টিমে ছিল বলা মুশকিল)। সাদ-তামিম-মিশু একটা টিম ছিল। আশরাফ-মারুফ-তুহিন মে বি একটা টিমে ছিল। মুন্না মনে হয় সামাউনের সাথে ছিল তখন। আর আমি-শুভ ছিলাম একটা টিম। তো আমার মনে আছে ফার্ষ্ট টিম কন্টেষ্টে আমরা একটাও সলভ করতে পারি নাই। আশরাফরা জানি কেমনে কেমনে একটা করে ফেলছিল(পরে আশরাফের থেকে ওই সলভের জন্য কয়েকদিন ভাব সাব দেখতে হইছিল মনে আছে :P)।

AUST কন্টেষ্টের পরে পানি অনেক বইছে। আশরাফও ওর টিম থেকে বের হয়ে আসছে, শুভও কি কারনে জানি কন্টেষ্ট ছেড়ে দিছিল, যোবায়ের গেল একটা টিমে। আসিফ আসল রিদোয়ানদের টিমে। এই তখন অবস্থা। তো এমন সময় আমি আবার আবিষ্কার করলাম আমার কোন টিম নাই। আমার মেম্বার সার্সিং। শেষমেষ কাউরে না পাইয়া ম্যাডকে নিয়ে একটা টিম করলাম। এখানে একটা মজার ঘটনা আছে। আমি আর ম্যাড কন্টেষ্ট করতে ঢুকব কন্টেষ্ট রুমে, তখন ম্যাড আমাকে বলে, ওই আমার তো খালি লজ্জা লাগছে। মানুষের কন্টেষ্ট রুমে ঢুকতে ভয় করতে পারে, মানুষ নার্ভাস হইতে পারে, আনইজি ফিল করতে পারে ... কিন্তু লজ্জা কেমনে পায় আল্লাহই জানেন। তো ওকে নিয়ে ফার্ষ্ট কন্টেষ্টে আমার মনে আছে আমরা একটা প্রোব্লেম সলভ করছিলাম। ওইটা আমার মনে আছে ইউভার ৪০০/৪০১ নাম্বার প্রোব্লেম ছিল। ওইটা আমার কমন প্রোব্লেম ছিল।(মুশাকে করছিলাম) তো ওইটা করলাম। রিদোয়ানরা তখন আমাদের ডিপার্টমেন্টের উজ্জ্বল ভবিষৎ খেতাব প্রাপ্ত টিম ছিল। ওরাও ওইটা করছিল, কিন্তু আমাদের পরে। আর ওদের ওইটায় মনে হয় পেনাল্টি ছিল। ওরা আর করতে পারে নাই ওইদিন। ফলাফল, আমরা ওদের থেকে উপরে ছিলাম ওইদিন(:D :D)। পরে আমাদের সাথে মামনি(বাংলার ঠোঙ্গার রানী খ্যাত নায়লা) একদিন করছিল। পরে আমাদের পার্মানেন্ট মেম্বার হিসেবে আসল সাকিব। হ্যা হ্যা এই সেই সাকিব, যে কিনা এখন ম্যাড সাকিব হয়ে গেছে (:P :P)। তো আমাদের লাইন আপ শেষমেষ দাড়ালো আমি-ম্যাড-সাকিব এইটাইপের। 

এর মধ্যে শুভ আবার ব্যাক করল। নরমাললি টিম হয় তিন জনের। তো আমরা ভাবলাম আমরা তো ছোট, চার জনে করলে কিছু হবে না। সেই মত আমরা করতে থাকলাম। আমাদের মধ্যে সলভিং এরকম ছিল যে, শুভ ম্যাথ/জিওমেট্রি দেখত, ম্যাড-সাকিব(আই মিন ম্যাড আর সাকিব) দেখত সিমুলেশান, আমি বাকি সব(মানে ঘোড়ার ডিম :P আসলে সব কিছুই ট্রাই করতাম, যদিও পারতাম না কিছু)। এর মধ্যে অনেক ঘটনা ঘটে যায়। আশরাফ আমাদের টিমে আসে। ফলাফল, আমাদের টিমটা মুটামুটি ৫ জনের একটা আড্ডাবাজি গ্রুপ হয়ে যায়। খালা-মামনি একসাথে করত তখন। তো যেটা তখন হত, খালা-মামনিও কন্টেষ্ট শুরু হওয়ার দেড়-দুই ঘন্টা পরে চলে আসত। আর আমরা সবাই মিলে কন্টেষ্ট ফেলে আড্ডা মারতাম। অবশ্য, তখন ওই টিমের মামনি আর আমাদের টিমের ম্যাড কোন প্রোব্লেম হয়ত একসাথে ট্রাই করত। আর আমরাও এই আশায় বসে থাকতাম যে, ওরা যদি পেরেই যায় তাইলে তো ২টিমেরই হইল (:D :D :D)। আমরা এইরকম আড্ডাবাজী করে শেষে ইফতারি করে(তখন প্রতিদিন কন্টেষ্টের শেষে ইফতারি করাইত আমাদের ডিপার্টমেন্টে :D :D :D) বাসায় চলে জাইতাম আরকি। এই অবস্থা অবশ্য বেশী দিন ছিল না। পরে আমরা আবার সিরিয়াসলী কন্টেষ্টে ব্যাক করছি সেকেন্ড ইয়ারের শুরুতে। তখনকার লাইনআপ আমি-শুভ-আশরাফ।


এ সবই ছিল আমার কন্টেষ্টের শুরুর দিকের কথা। অনেক কথা বাদ পরছে ডেফিনেটলি। সব কিছুতো আর পুরা মনে নাই। সব ঘটনা এখানে বলাও সম্ভব না আসলে। অনেক বড় হয়ে যাবে। আমি জাষ্ট আর দুইটা ঘটনা বলব।

একদিন দেখি আশরাফ খালাকে ফ্লাডফিল দেখাচ্ছে। তো আমিও ওইটা ওর থেকে দেখে নিলাম। তো ওইদিনের কন্টেষ্টে একটা ফ্লাডফিল প্রব্লেম ছিল পানি-ভাত টাইপের। তো অনেক কষ্টে হইলেও ওইটা করছিলাম আমি আর সাকিব মিলে সেদিন। খুব মজা পাইছিলাম ওইটা অ্যাকসেপ্ট পেয়ে সেদিন। আরেকটা ঘটনা, তখন আমাদের ক্লাশের খালা-খালু জুটি হয়ে গেছে অথবা হবে হবে করছিল আরকি। আশরাফ তখন আমার সাথে কন্টেষ্ট করে। ওর সাথে সামাউনের একটা ব্যাপারে ঝামেলা হইছিল। তো হুট করে দেখি সামাউন তার নিউ টিম নিয়ে আসল। তার টিমমেম্বার খালা-মামনি। আমাদের আশরাফের দিকে তখন তাকানো যাচ্ছিল না। আহারে ... বেচারা !!!


এই লেখা এখনি শেষ করা দরকার। অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে। ভাবছিলাম শুধু কন্টেষ্টের শুরুর দিককার কিছু স্মৃতি রোমন্থন করব কিছু। কিন্তু লিখে ফেললাম অনেক কিছু। কেউ যদি পড়ে, তাইলে বিরক্ত হতে পারে এই ভেবে এখানে শেষ করে দিলাম। শেষ করার আগে বলব, শুরুর দিককার দিনগুলোয় পায়েল, আশরাফ, সামাউন ... অনেক অনেক হেল্প করছে। অনেক সময়ই অনেক কোড দেখে দিছে। অনেক ধন্যবাদ তাদের। মনোয়ার স্যার অনেক উৎসাহ দিতেন। জান ভাইও অনেক উৎসাহজনক কথাবার্তা বলছেন। জামি ভাই, শিপলু ভাই, আনা আপু ... এরাও অনেক হেল্প করছেন। উনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।

ভাল থাকবেন।

আমার আমি ...

আমার ব্লগিং এর ধারনা একদম নতুন নয়। আমার অনেক বন্ধু-বান্ধবকেই দেখি ব্লগিং করতে। আমিও কিছুটা উৎসাহী ছিলাম এই ব্যাপারে। কিন্তু আমি যে পরিমান অলস ... তাই এত এত লেট হল শুরু করতে। প্রথমে প্রথম কথা বলে নেই। আমার যেহেতু লেখালেখির অভ্যাস সেই অর্থে নেই ... বলা উচিত একদমই নেই(ছোট বেলায় অনেক ট্রাই করছি ডাইরী লিখতে ... কখনোই হয়নি যেটা করা। আমি একটা ডাইরী কিনতাম, লিখতাম প্রথম দুই পাতা, ব্যাস শেষ !! কত ডায়রীর যে এরকম ধংশ হয়েছে ... আমি সঠিক সংখ্যা বলতে পারছি না।) । এদিক থেকে বলা যায়, এই লেখালেখি শুরু করার (অবশ্যই অনেক উৎসাহের সাথে) অভ্যাস অনেক পুরানো।

এই পোষ্টের শিরোনাম এবং আমার ব্লগের শিরনাম একি। এটা মনে হয় একটু ব্যাখ্যা করা দরকার। "আমার আমি" কথাটা কোন ভাবেই মৌলিক না ... কথাটার তাৎপর্য আসলে অনেক। এখন অতশত না বলে এটুকুন বলি, আমার এই পোষ্টে আমি আমার কথাই লিখব। আমার অতীত, বর্তমান এইসব ... আর ভবিষৎ এর কথা এখনই বলতে পারছি না।

আমার পুরো নাম আবদুল্লাহ আল রকিবুল ইসলাম। মাশাল্লাহ অনেক বড় নাম। জীবনে যতবার কোন ফর্ম ফিলাপ করছি, ততবার আমার এই নামের চোদ্দ গুসটি উদ্ধার করছি। আমার এই নামটাই কিন্তু একদম জন্মের সময় রাখা হয়নি। প্রথমে আমার নাম রাখা হয়েছিল আবদুল্লাহ আল মামুন। সাথে ডাক নাম রকিব। রকিব নামটা রাখা হয়েছে আম্মার নামের অদ্যাক্ষর মিলিয়ে। তো আমি যখন ক্লাশ টুতে পড়ি, তখন আব্বা অনেক শখ করে আমার নামের মামুন শব্দটা কেটে রকিবুল ইসলাম বসায়। হয়ত আব্বা মনে মনে খানিকটা ঈর্সান্বীত হয়ে এটা করছে। আই মিন, আমার নামের মধ্যে তার নামের অংশ অ্যাড হয়েছে এর মাধ্যমে।

আমি বড় হয়েছি পটুয়াখালীতে। ওখানেরই একটা স্কুল থেকে এস এস সি পরীক্ষা দিয়ে ঢাকায় এসেছি। এর পর নটরডেম থেকে ইন্টার ... শেষে ডিউতে সি এস ই তে। মাঝে অবশ্য ডিউরই ম্যাথ ডিপার্টমেন্টে ছিলাম এক বছর।

আমার আমিতে আসলে নতুন করে কিছু বলার নেই। এই ব্লগিং এর মূল উদ্দেশ্য আসলে আমাকে নিজেকে আমি কিছু সময় দিব। নিজের অতীত স্মৃতি রোমন্থোন করব। এইতো। নিজে নানান কাজে ব্যাস্ত থাকি। অনেক সময় আশে পাশের মানুষ দূরে থাক, নিজেকেই ঠিক মত সময় দিই না ... তাই নিজের জন্য কিছু সময় বের করার প্রয়াস বলা যেতে পারে এই লেখালেখিকে।

আবার ব্লগিং এর শুরুর কথায় ফিরে যাই, আমার অনেক ফ্রেন্ড ব্লগিং করে আগেই একবার বলেছি। ওদের ব্লগিং মুলত প্রগ্রামিং কন্টেষ্ট রিলেটেড। আমার ব্লগিংও ওদের মত ওই রিলেটেড হওয়ার কথা ছিল। পরে ভেবে দেখলাম, কি লাভ সব কিছুতে কন্টেষ্ট টেনে এনে। কন্টেষ্টের জন্য এমনিতেই অনেক সময় দিই। বরং ওইখান থেকে কিছুটা রিলিজ পাওয়ার মত না হয় একটা জায়গা করি। এই ব্যাপারে আমার বন্ধু মিশুকের একটা মন্তব্য খুব কাজে দিয়েছিল। ও বলছিল "কন্টেষ্টের ব্লগ করে কি করবি ? ওইগুলোর জন্য কি ব্লগের অভাব পরছে ? বরং তুই যা লিখবি, দেখবি ঐ ব্যাপারে তোর থেকে ভাল লেখা অলরেডী নেটে আছে ... এর থেকে তুই তোর ফিলসফি নিয়ে লিখ, তোর চিন্তা গুলো তাতে লিখ। এটা অনেক ভাল হয় না ?" ওর কথাটা খুব মনে ধরছিল তখন।

আমার লেখালেখির ব্যাপারে একটা কথা বলা ভাল। আমার লেখা খুব খুব খুবই ছন্নছাড়া টাইপের। এই এখন এক ব্যাপারে হয়ত লিখছি। কিছুক্ষন পরেই হয়ত প্রসঙ চেঞ্জ। আরেকটা ব্যাপার হল আমার লেখার ভাষা। অনেক কষ্টে এখানে ভাল ভাল শুদ্ধ ভাষায় লিখছি। এর পর হয়ত আমি যে ভাষায় সচ্ছন্দ বোধ করব সেটা ইউজ করব। সর্বশেষ ব্যাপার হল, আমার খুবই পছন্দের লেখক হলেন হূমাউন আহমেদ আর জাফর ইকবাল স্যার। আমার লেখায় উনাদের প্রভাব থাকার সমভাবনা তাই প্রবল।

শেষ করার আগে আমার বন্ধু পায়েলকে ধন্যবাদ দিব ব্লগিং শুরু করতে ওর ইন্সপারেশনের জন্য। ওর ইন্সপারেশান না থাকলে হয়ত অনেক কাজই করা হতনা। থ্যাঙ্কস দোস্ত।

ভাল থাকবেন।