শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০১৪

আমাদের JUGBD

জাভা একটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ, বলা ভাল হাতির ন্যায় মস্ত বড় বিশাল একটা ল্যাঙ্গুয়েজ। বর্তমান সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে একটা বড়সড় জায়গা জুড়ে বসে আছে এই জাভা (Java) নামের ল্যাঙ্গুয়েজটি।

কথায় আছে মানুষের প্রয়োজনেই একেকটা প্রযুক্তির উদ্ভব ঘটে, সেরকম একটা সময়ে মানুষ অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রগ্রামিং এর প্রয়োজনীয়তা বোধ করল, এবং জাভার সূচনা ঘটলো। এবং যেটা হল … জন্মের শুরু থেকেই জাভা দুনিয়াজুড়ে প্রগ্রামারদের মন জয় করে নিল। কিছুদিন পরে দেখা গেল কিছু প্রোগ্রামার মিলে ধোঁয়া উড়ানো কফির কাপ হাতে জাভা নিয়ে বকর বকর করতেছে। আস্তে আস্তে দেখা গেল, জাভা নিয়ে এরকম প্রোগ্রামারদের মধ্যকার আলোচনা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকলো। ব্যাপারটাকে একটা প্রতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য এই ধরনের আলোচনার একটা কেতাদুরস্ত নামও আবার দেওয়া হল, Java User Group (JUG). যেহেতু জাভার জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়তে থাকলো, তো, প্রোগ্রামাররাও নিজেদের মধ্যে এইটা নিয়ে বেশি বেশি কথা বলার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করল। এরফলে যেটা হল, জাভার সাথে সাথে “জাভা ইউজার গ্রুপ” (JUG) ব্যাপারটাও দুনিয়াতে খুব অল্প সময়েই জনপ্রিয় হয়ে গেল।

আমি যেই কথাগুলি বললাম উপরে, কিছুটা কল্পনা মিশ্রিত হলেও, আসলে কিন্তু এই টাইপের কিছুই ঘটেছিল। বিশ্বাস হচ্ছে না ? গুগলে সার্চ করে দেখে আসুন JUG এর উপর। খুব পাঠ্যপুস্তকের ভাষার মত করে “জাভা ইউজার গ্রুপ” সম্পর্কে বললে যেটা বলা যায়, এটা হল জাভা ইউজ করে এমন সব প্রোগ্রামারদের একটা কমিউনিটি যারা রেগুলার মিটিং অ্যা্রেঞ্জ করে, নিজেদের মধ্যে মেইল চালাচালি করে, অথবা অনলাইনে কোন গ্রুপ করে সক্রিয় থাকে। এই কমিউনিটির মধ্যে মানুষজন জাভার বিভিন্ন ফিচার নিয়ে আলোচনা করে, জাভা নিয়ে গল্প করে, কাজ করতে গিয়ে কে কি ধরনের সমস্যায় পরেছিল … তা নিয়ে বকবক করে, নিজেরা কিছু ওপেন সোর্স প্রজেক্ট খুলে সবাই মিলে কাজ করে … এইটাইপের আরকি !

মাসুম ভাই, জাভা মিট-আপ ২.০ এর অনুষ্ঠানে।

যেহেতু আমাদের দেশের সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিগুলিতে গনহারে জাভা ব্যাবহার করা হয়ে থাকে, সো, আমরাও আমাদের দেশে এরকম একটা সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলাম। সেখান থেকেই Java User Group Bangladesh (JUGBD) নামের একটা সংঠনের উৎপত্তি ! প্রকৃতপক্ষে JUGBD র পুনর্জন্ম হয়েছে কথাটা বলা ভাল, কারন বেশ কয়েক বছর আগে থেকে এটার কিছু কার্যক্রম শুরু হলেও … মাঝের সময়টাতে এর সব ধরনের কর্মকান্ড বন্ধ হয়ে যায়। আমরা কিছু পিচ্চি-পুচ্চি টাইপের মানুষ বড়দের সমর্থন নিয়ে JUGBD র কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। মজার ব্যাপার হল, সংঠনটির বয়স মাত্র কয়েক মাস হলেও, এরই মধ্যে আমরা দুই দুইটি সফল আলোচনা সভার আয়োজন করতে সক্ষম হয়েছি। এই দুই দুইটি সফল মিটিং আয়োজনের পিছনে যারা অকুন্ঠন অবদান ও সমর্থন রেখেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই এই লেখার মাধ্যমে।

প্রথম মিট-আপের পরে গ্রুপ ছবি, স্থানঃ ফ্রেপড হল।

আমাদের প্রথম মিটি-আপ ৫ অক্টোবর, ২০১৩ তারিখে পলাশীর মোড়ে “ফ্রেপড হলে” অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মুলত এই মিট-আপের উদ্দেশ্যে ছিল নিজেদের মধ্যের পরিচিতি বাড়ানো। পাশাপাশি JUGBD এর লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, একটা কর্ম-পরিকল্পনা গ্রহন, কিভাবে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো যায় … এগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। Therap Services এর বজলুর রহমান রোকন সুচনা বক্তব্য দিয়ে এদিনের আলোচনা শুরু হয়। এরপর Therap Services এর তাহসিন ভাইয়া এবং Widespace থেকে আবদুল্লাহ ভাই জাভার বিভিন্ন টেকনোলজী নিয়ে আলোচনা করেন।

দ্বিতীয় মিট-আপের পরের গ্রুপ ছবি, স্থানঃ থেরাপ বিডি।

JUGBD এর দ্বিতীয় মিট-আপটি আয়োজন করা হয়েছে Therap Services এর পক্ষ থেকে ৬ ডিসেম্বর, ২০১৩ তারিখে। Therap একটি সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যারা শুধুমাত্র জাভার টেকনোলজী নিয়ে কাজ করে। এরকম একটি প্রতিষ্ঠান যে “জাভা ইউজার কমিউনিটি” র জন্য কিছু একটা করবে, সেটা সহজেই অনুমেয়। দ্বিতীয় এই মিটিংটা ছিল আগের মিট-আপের থেকে অনেক বেশি গোছানো। এই অনুষ্ঠানে তিনজন বক্তা প্রেজেন্টেশন দিয়েছেন। Vantage Labs থেকে মোজাম্মেল ভাই “Laravel” এর উপর, Therap Services থেকে মাসুম ভাইয়া “JVM Diagnostics” এর উপর এবং Widespace থেকে আবদুল্লাহ ভাই “Cassandra” এর উপর প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন। অনুষ্ঠানের শেষের দিকে সবাই মিলে ওপেন সোর্স প্রজেক্ট নিয়ে আলোচনা করেন। আশা করে যাচ্ছে JUGBD গ্রুপ থেকে অল্পসময়ের মধ্যেই একটা ওপেন সোর্স প্রজেক্টের কাজ শুরু করা হবে।

JUGBD মিট-আপ ৩.০

JUGBD পরবর্তী মিট-আপের আয়োজন করার ঘোষনা দিয়েছে। এবারের মিট-আপ আয়োজনের দ্বায়িত্ব নিয়েছে Widespace। এখানে উল্লেখ্য Widespace ও কেবলমাত্র জাভা টেকনোলজী নিয়ে কাজ করে। ২২ মার্চ, ২০১৪ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে এই অনুষ্ঠানটি। যারা এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আগ্রহী, তারা এই লিঙ্কে এই অনুষ্ঠানের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য পাবেন।

যারা জাভা নিয়ে কাজ করতে এবং আমাদের কমুনিটিতে জয়েন করতে আগ্রহী … তারা আমাদের ফেইসবুকের গ্রুপ JUGBD তে সদস্য হতে পারেন।

মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০১৪

নিখোঁজ বিমানের জন্য

কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিংগামী বিমানের হারিয়ে যাওয়াটা আমার বাস্তব জীবনে দেখা বড় মাপের ক্লাইমেক্সগুলির মধ্যে একটা হয়ে থাকবে। কেন নয় বলুন ? কিছু ইন্টারেষ্টিং পয়েন্ট এরকম হতে পারে,

১. ওই বিমানটিতে দুই জন ভুয়া পাসপোর্টধারী ব্যাক্তি ছিলেন, যেই পাসপোর্ট দুইটি বছরখানিক আগে হারিয়ে গিয়েছিল থাইল্যান্ড থেকে। এই ভুয়া পাসপোর্টধারী ব্যাক্তি আবার প্রায় একই সময়ে পাশাপাশি দুইটি সিটের টিকেট কেটেছিলেন।
২. বিমানটি যখন থেকে রাডার থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, তখন বিমানটি মাটি থেকে প্রায় ৩৫হাজার মিটার উপরে ছিল ... কোন দুর্ঘটনায় পরলে সেটি কোন বিমানবন্দরের সাথে যোগাযোগ করার জন্য যথেষ্ট সময় পেয়েছিল।
৩. বিমানটি হারিয়ে যাওয়ার মুহুর্তে এটি তার যাত্রা পথ থেকে দূরে সরে যাচ্ছিল।
৪. ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার প্রযুক্তি ব্যবহার করে উড়োজাহাজকে পুরোপুরি রাডার থেকে গায়েব করে দেয়া যায়। আর হারিয়ে যাওয়া মালয়েশীয় এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজটিতে এই প্রযুক্তি নিয়ে সরাসরি কাজ করছেন এমন ২০ জন যাত্রী ছিলেন।

ঘটনার পিছনে যদি আসলেই কোন ঘটনা ঘটে থাকে, আমাদের মত সাধারন মানুষের সেটা হয়ত কখনোই জানা হবে না। হয়ত MI6 বা CIA এর মত বড় বড় এসপিওনাজ এজেন্সীর ঘাগু গোয়েন্দারা এটার সাথে জড়িত। বা কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠির সম্পৃক্ততা থাকতেই বারে। হয়ত যা ভাবছি তার কিছুই হয়নি ... কোন কারনে বিমানটি হয়ত ক্রাশ করেছে। এমন যায়গায় ধ্বংসাবশেষ পরেছে, যেটা হয়ত উদ্ধারকারী দল খুঁজে পাচ্ছে না। হয়তবা এই রহস্যের কোন কিনারাই হবে না কখনো। ১০/১২ বছর পরে এই ঘটনা নিয়ে হয়ত সুপার ক্রাইম-থ্রিলার টাইপের কোন মুভি বানাবে কেউ ... আমরা হয়ত কোন একটা ছুটির দিনের অলস বিকেলে সেটা দেখে শিহরিত হব।

কিন্তু এই অনেক "হয়ত"র মধ্যে আমি কিছুতেই শান্তি পাচ্ছি না। হারিয়ে যাওয়া এই বিমানের যাত্রীদের পরিবারগুলির কথা ভাবলেই মন খারাপ হচ্ছে। অনিশ্চয়তা একটা খারাপ অবস্থা। একটা মানুষ হারিয়ে যাওয়া আর মরে যাওয়ার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। ... হে বিমান, ফিরে এসো।