সকাল ১১.৩০
- দোস্ত তুই কোথায় ? সমাবর্তনে আসবি কখন ?
- আমি একটু দোকানে যাই। চলে আসবো ২টার আগেই।
দুপুর ১.৩০
- দোস্ত তুই কোথায় ?
- আমি বাসার নিচে নামছি একটু। রেডি হয়ে আসতে যতক্ষন লাগে।
- তুমি যেহেতু মেয়ে মানুষ না ... আশা করি বেশি সময় লাগবে না রেডি হইতে।
দুপুর ৩.০০
- দোস্ত তুই কোথায় ?
- এইতো, বাসা থেকে বের হচ্ছি
বিকাল ৪.০০
- দোস্ত, তুই আসবি না ?
- আমি তো চলে আসছি ... এই আর তিন চার মিনিট লাগবে।
- আচ্ছা, কাল এসে কি করবো ? আজকেই তো ছবি টবি তুলে ফেললাম !
- তাই তো। কাল এসে কি করবো ?
- আমরা আজকে কোথায় খাইতে যাব ?
- চল গুলশান যাই !
- প্রত্যেকদিন অফিস করতে ওইখানে যাস ... তাই বলে আজকেও ?
- না না ... গুলশান অনেক দূর হইয়া যাবে !
- চল বার্ড'স আই ভিউতে যাই।
- ওইখানের খাওয়া ভাল না !
- চল ফ্ল্যম্বিতে যাই ... বুফেই খাই !
- ফ্ল্যম্বি তো আর গুলশানে না ... তাই না ?
- দোস্ত, এখন গুলশানে যাবি ? ম্যালা জ্যাম !
- চল বেইলী রোডে যাই।
- চল এখানে যাই ...
- চল সেখানে যাই ...
- চল হারিয়ে যাই ...
...
...
...
...
১৫/২০ মিনিট এভাবে তাহাদের আলোচনা চললো। এরপর ...
- চল গুলশান যাই !
- চল বার্ড'স আই ভিউতে যাই।
- চল ফ্ল্যম্বিতে যাই ... বুফেই খাই !
- চল এখানে যাই ...
- চল সেখানে যাই ...
- চল হারিয়ে যাই ...
...
...
...
শেষ পর্যন্ত ৩০/৪০ মিনিটের আলোচনা শেষে আমরা বার্ড'স আই ভিউ রেষ্টুরেন্টে গেলাম।
- দোস্ত তোর ব্যাগটা সুন্দর হইছে। কোরিয়া থেইক্কা আনছিস ?
- হু।
- তয় দোস্ত ব্যাগটা মেয়েদের মনে হচ্ছে ! :P
- (তাহার গার্ল ফ্রেইন্ড) দেখছো, ও বলছে ব্যাগটা মেয়েদের! আমাকে দিয়া দেও !
- এই, আজকে আমাকে কেমন লাগছে ?
- খুব সুন্দর। এরকম ফরমাল থাকলেই তো পার।
- ধুর। প্রত্যেক দিন কি এরকম থাকা যায় নাকি ? আচ্ছা, সত্যি করে বল তো, কেমন ভাল লাগছে ?
- ইসসস ... খালি ভাল লাগছে শুনতে মনে চায়, না ? :P
- ওই জানিস, আজকে অমুকে না তার হবু শ্বাশুড়ির মাথায় সমাবর্তনের টুপির ফিতা ঠিক কইরা দিছে !
- কস কি ! সত্যি নাকি ?
- হ ... ছবি আছে ! দ্যাখ দ্যাখ !
- দোস্ত তোর ফার্ষ্ট ইয়ারের স্ট্যাটিসটিক্স পরীক্ষার কথা মনে আছে ?
- কোন কথাটা যেনো দোস্ত ?
- ওই যে ... তুই পরীক্ষা দিয়া বের হইয়াই চিল্লায় বলতেছিলি, "আজকে দিছি সব বানায়ে লেইখ্যা !" তখন তোর পাশ দিয়া একজন ম্যাডাম যাচ্ছিলেন। সে তোর কথা শুনে বলতেছিলেন, "বানায়ে লিখলে লাভ হবে না !"
(এখানে একটা কথা বলে রাখি, আমাদের স্ট্যাট স্যার যেই নোট সরবারোহ করেছিলেন সেটার প্রথম প্রশ্নটা ছিল "What is statistics ?" আর সেটার উত্তরের প্রথম লাইন ছিল অনেকটা এরকম যে, "It is very hart to define statistics in a few words"। এরপর থেকে কোন পরীক্ষায় কোন আনকমন ডেফিনেশন মার্কা প্রশ্ন আসলেই আমি লিখা শুরু করতাম, "It is very hart to define অমুক in a few words")
- ওই, তুই ড্রেস রিহার্সালে যাস নাই ক্যান ?
- ধুর! গরমের মধ্যে ভিতরে যাইতে ইচ্ছা করে না !
- তুই না ফার্ষ্ট হইছিস ? তোর নাম ধরে ডাকলে এইখান থেকে বলবি, "ইয়েস স্যার" ?
- হা হা হা ! হু !
- এই যে ... তুই যে তোর গার্ল ফ্রেইন্ডকে (যে DU তে পড়ে না) এইখানে নিয়া আসছিস, এইটা কি ঠিক হইলো ?
- ক্যান ? সমস্যা কি ?
- তোর পোলাপাইন এই ছবি দেইখা কি কইবো ?
~ (পাশ থেকে আরেকজন) ক্যান ? ওর ছেলে মেয়ে তো ভাববে ওদের বাবা-মা সব সময়ই এক সাথে ছিল !
- হ ! হইছে কাম ! তখন যদি আমার পোলা কয়, "আব্বা, আমার বউ কই তাইলে ?" :P
অনেক অনেক ছবি তোলার মধ্য দিয়ে আজকে সমাবর্তনের ড্রেস রিহার্সালের দিনটি শেষ হল। অনেক অনেক ছবি তোলার মধ্যে আমাদের বেষ্ট পার্ট ছিল মনে হয় যোবায়ের মোবাইলের ক্যামেরায় তোলা সেলফি গুলা। কত অদ্ভুট টাইপের যে সেলফি আমরা তুললাম আজকে ! সব শেষে বন্ধুরা মিলে ডিনারে গেলাম বার্ড'স আই ভিউতে। খাবার মুটামুটি, কিন্তু যায়গাটা খুবই ভাল। শুধু বসে থাকার জন্য হলেও এক-আধবার যাওয়া যায় এরকম যায়গায়। যাই হোক, কাল সমাবর্তনের শেষ দিন। ভালয় ভালয় শেষ হোক সমাবর্তন, এই প্রত্যাশায়। :)