শনিবার, ২৯ জুন, ২০১৩

২৯শে জুন ২০১৩, দিনটি যেমন গেল !


আজকে মিশ্র একটা দিন কাটালাম। আগে থেকেই জানতাম প্রিয় একজন মাস খানিকের জন্য ঢাকা ছেড়ে যাবে আজকে। সকালে উঠেই মনে হল কেউ একজন নেই ব্যাস্ত এই শহরে। তাকে খুব মিস-টিস করতেছি এর মধ্যেই একটা থিসিস পেপার নিয়ে বসা লাগলো সেটার ম্যাকানিজমটা বুঝতে। কিছুতেই সেইটা বুঝতে পারলাম না। এই থিসিস একটা ঝামেলারূপে আমাদের মত নব্য চাকুরীজীবিদের জীবনে এসেছে ! সকালে অফিসে ঢুকি একরাশ টেনশন নিয়ে( যে থিসিসটা শেষ করতে হবে ), বিকেলে অফিস ছাড়ি একরাশ হতাশা নিয়ে( যে এখন খুব টায়ার্ড লাগছে, বাসায় গিয়ে থিসিসের কিছুই করা হবে না)।

দুপুরে IIT তে অফিসের একটা সেমিনার ছিল, সেটাতে অ্যাটেন্ড করলাম। খালেদ ভাই(৬ষ্ঠ ব্যাচ, সিএসই ডিইউ) সেখানে অন্য স্যারদের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিল যেখানে আমার সিএসই ডিইউ র ১৫তম ব্যাচের পরিচয় ছাপিয়ে CSEDU Food Lovers (সিএসই ডিইউ খাদক সম্প্রদায়) এর একজন অ্যাডমিনের পরিচয় প্রাধান্য পেল। ভাল লাগলো ব্যাপারটা ! সাথে সাথে নিজের চাকুরীর জীবন শুরুর এক মাসের মাথায় আমি ছেলেপুলেকে বুদ্ধি-পরামর্শ দিলাম কিভাবে একটা চাকুরী বাগাতে হবে ! বাহ, আমার দুঃসাহসে আমি নিজেই মুদ্ধ হয়ে গেলাম।

দুপুরের পরে কিছু বন্ধুবান্ধব যাদের সাথে এখন আর শনিবার ছাড়া এখন আর দেখা হয়না, তাদের সাথে দেখা করলাম। যেমন - প্রিয়াঙ্কা, আশরাফ, লামিয়া, শুভ, পিঙ্কি, সজিব, নায়লা ...  পোলাপাইন গুলিরে দেখলে এখনো আমার মনটা ভাল হয়ে যায়, সেইটা কি ওইগুলি জানে? কি জানি! জানে হয়ত, তাদেরই কেউ কেউ আবার হয়ত জানেও না ! সাদের সাথে এরপর পুরান ঢাকার রয়ালে গিয়ে খাসির তেহারী আর গ্রিল চিকেন খেলাম। যারা আগে কখনো এই কম্বিনেশনে(তেহারী-গ্রিল চিকেন) খান নি, তারা এইটা খেয়ে দেখতে পারেন। অসম্ভব ভাল লাগছে। খাওয়া দাওয়ার পরে আমি আর সাদ একে অপরের সাথে প্রতিজ্ঞা করলাম নেক্সট ১০ দিন আমরা চর্বিযুক্ত সকল ভারী খাবার পরিহার করে চলব। এখনো জানিনা এইটা কিভাবে মেনে চলবো ! ওইখানে খাওয়ার মধ্যে একটা পুরান ঢাকাইয়া মেয়ে ব্যাপক হারে আমার সাথে টাঙ্কি মারার ট্রাই করলো। মেয়েটি পুরান ঢাকার বুঝলাম কারন খাওয়ার মধ্যে তার বাবা ফোন করছিল মনে হয় ... তখনকার তাদের কথোপকথন শুনে ! আরে ভাই(আপু হবে আসলে কথাটা), তোমার না হয় আমার মতই স্বাস্থ-টাস্থ একটু ভাল ... তাই বলে এভাবে টাঙ্কি মারে নাকি ? বোকা মেয়ে কোথাকার !

বিকেলে হলে পোলাপাইনের সাথে আড্ডা। কে বিকেলে নাস্তা খাওয়াবে সেইটা নিয়ে বহু ক্যাচালের পরে ওরা আবার চঙ্খারপুলের সোহাগ হোটেলে গেল কালাভুনা টুনা খেতে, আমি প্রতিজ্ঞার কারনে খেতে পারলাম না ! ফেরার পথে যোবায়ের সাথে কথপোকথন -
....................
আমিঃ দোস্ত, যুবক কাকে বলে? আমরা কি এখন তরুন? নাকি যুবক ?
যোবায়েরঃ মনেহয় যুবতীদের জামাইদের যুবক বলে ! :P
...............................

এরপর বাসায় এসে দেখি বুয়া বিকেলের রান্না করে নাই। আরো কয়েকটা কারনের সাথে এইটা মিলে মেজাজ মুটামুটি ভালই খারাপ হইল। সেইটা নিয়ে আবার জিমেইলে স্ট্যাটাস দেওয়া মাত্র কিছু বন্ধুবান্ধব সাথে সাথে খোঁজ নিল(সাদ, সজিব ...) ক্যান মেজাজ খারাপ। ... শেষ পর্যন্ত আমার অনুভূতি, "বন্ধু ছাড়া জীবন ? ইম্পসিবল !"

এই লেখা যখন লিখছি তার একটু আগে বন্ধু পায়েল একটা মিউজিক শুনতে দিল। মিউজিকটা ভালই ... থিম হচ্ছে "লিভ অ্যা বিউটিফুল লাইফ" টাইপের কিছু। শুনতে শুনতে মনে হচ্ছে কিছুদিনের জন্য দূরে চলে যাওয়া মায়াবতীকে ছাড়া আমার লাইফ তো আসলে বিউটিফুল না ! ভাবতেই মনটা আরেকদফা খারাপ হয়ে গেল। এর মধ্যে পায়েলের সাথে আমার জিমেইলে কথপোকথনঃ
......................
যোবায়েরঃ ফেসবুকে একটা মিউজিক শেয়ার দিয়েছিলাম। শুনছিস ?
আমিঃ নাহ, কাল তো বাইরে ছিলাম। আজকে শুনবোনি। কিসের মিউজিক? মানে দেখছি যে একটা মিউজিক শেয়ার দিয়েছিস।
যোবায়েরঃ ট্রান্স। যাষ্ট মিউজিক।

(~~~কিছুক্ষনের বিরতি~~~~)

আমিঃ মিউজিকটা শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেল।
যোবায়েরঃ হোয়াই? গানটার থিম তো "to live a beautiful life" নিয়ে।
আমিঃ মায়াবতীর কথা মনে পরছে। :(
যোবায়েরঃ আমি লাইট অফ করে দিয়ে টানা শুনতেছি, মিক্সড ফিলিং হইতেছে। আমার মনে হচ্ছে জীবনের মোষ্ট ইম্পর্টেন্ট পার্টটা শেশ হয়ে গেল ... কিন্তু কিছুই করতে পারলাম না।
আমিঃ হুম! সেটাও ট্রু হয়ত !
যোবায়েরঃ btw, sorry for making u sad ! এখন মনে হইতেছে মিউজিকটা স্যাড। someone's leaving ! :(
আমিঃ হা হা ! মিউজিকটা সুন্দর। "to live a beautiful life" এর যেই কন্সেপ্টটা বললি, সেটাও পুরাপুরি আছে। আসলে ও আজকে চলে গেছে তো ... সো মিউজিকের মধ্যে যে রোমান্সটা আছে, সেখানে ব্যাপারটা ধরা খাচ্ছে !
............................

... মায়াবতী তুমি ফিরে এসো, ফিরে এসো অনেক ভালবাসা নিয়ে ! তোমারি প্রতিক্ষায় ...